বুক রিভিউ – লার্ন লিডারশিপ ফ্রম দ্য গ্লোবাল লিডারশিপ গুরু [তৃতীয় পর্ব]
নেতৃত্ব কী
নেতৃত্ব কোন বিশেষ ব্যক্তি কিংবা তাঁর পদবী নয়। নেতৃত্ব¡ হচ্ছে মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরির নৈতিক প্রক্রিয়া যা শুধুমাত্র বিশ্বাস, দায়বধ্যতা, প্রতিশ্রুতি, আবেগ, ভালোবাসা এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে তৈরি হয়। নেতৃত্ব হচ্ছে কোন একটি স্বপ্ন বা আকাঙ্খা পূরণের জন্য কোন একটি দল বা গোষ্ঠির একসাথে চলার সংগ্রাম। ওয়ারেন বেনিস নেতৃত্বের বিষয়টিকে ব্যাখা করতে যেয়ে বলেছেন, নেতৃত্ব হচ্ছে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার ক্ষমতা। যিনি কল্পনা কিংবা স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে দেখাতে পারেন তিনিইতো নেতা। নেতৃত্ব¡ হচ্ছে একজন মানুষের পদাতিকার কতৃত্বের বাইরে এসে ইতিবাচক কাজে মানুষকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করার ক্ষমতা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ, কেনেডি নের্তৃত্ব সম্পর্কে বলেছিলেন, নেতৃত্ব এবং শেখা একে অপরের জন্য অপরিহার্য। সফল নেতা সবসময় ইতিবাচক কাজে মানুষকে প্রভাবিত করে কিন্তু ক্ষমতা দেখায় না। কতৃত্ব প্রয়োগ করা একজন নেতার উদ্দেশ্য হতে পারে না বরং ইতিবাচক কাজে মানুষকে প্রভাবিত করাই নেতার কাজ।
নেতৃত্বের আত্মপ্রকাশ
১৯৮৯ সালে ওয়ারেন বেনিস নেতা হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটি বই লিখেছিলেন। বইটির নাম হচ্ছে “অন বিকামিং অ্যা লিডার”। একজন সত্যিকারের নেতার নিজেকে প্রমান করার কোনো আগ্রহ থাকে না কিন্তু নিজেকে প্রকাশ করার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ আছে। একজন সত্যিকারের নেতার জন্য যা সত্যি হচ্ছে তা হলো -ভালো কিংবা খারাপ সবকিছুই আমাদের জন্য সত্য।
একজন মানুষের যখন তাঁর সকল সম্ভাবনা সত্যিকার ভাবে প্রকাশ করতে পারে তখন তাঁর সত্যিকারের নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা প্রকাশ পায়।
একজন নেতা খুব আবেগ আগ্রহের সাথে তাঁর জীবন থেকে মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিজেকে সম্পূর্ণরুপে প্রকাশ করার সক্ষমতা রাখেন। নিজেকে প্রকাশ করার এই মুক্ত এবং আনন্দদায়ক বৈশিষ্টই একজন নেতার সবচেয়ে বড় গুণ এবং নেতৃত্ব দেওয়ার পূর্ব শর্ত। নেতৃত্ব দেওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে সবার আগে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হবে। সত্যিকারের নেতারা তাদের সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখেন সেজন্য তারা তাদের নিজের শক্তি প্রয়োগে সঠিকভাবে অনুশীলন করতে পারেন। সত্যিকারের নেতারা তাদের দূর্বলতাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারেন এবং দূর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। সত্যিকারের নেতা জানে সে কি চায়, কেনো চায় কিভাবে মানুষের সাথে যোগাযোগ করলে মানুষকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব এবং মানুষের কাছ থেকে সমর্থন আদায় করা সম্ভব।
বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো পৃথিবীই আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে যাচ্ছে বলে মনে করা হয়। কারণ বর্তমান প্রজম্মের মধ্যে যে পরিবর্তন হচ্ছে তা খুব আগ্রাসী এবং এই পরিবর্তন জীবন থেকে শুরু করে ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রেও হচ্ছে। পৃথিবীর এই পরিবর্তনের পেছনের শক্তি হচ্ছে আমেরিকা। শুধুমাত্র পৃথিবীব্যাপি নিয়মকানুন, ন্যায় নীতিই পরিবর্তন হচ্ছে না বরং পরিবর্তনের পূরোণো খেলাটাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা যে পৃথিবীতে বসবাস করছি, এই পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে আপনি কিভাবে নেতৃত্ব দিবেন তা শিখলেই হবে না বরং অদ্ভুদ এই নতুন বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার কলা কৌশল, চুক্তি প্রভৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি নেতৃত্ব এবং নেতৃত্বের আগ্রাসী কলা কৌশল সম্পর্কে না জানেন তবে আপনি নেতা হয়েও আগ্রাসী নেতৃত্ব দ্ধারা শোষিত হবেন।